মাধবপুর লেক

মাধবপুর লেক

মাধবপুর লেক (Madhabpur Lake) বা হ্রদটি বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সমৃদ্ধির একটি অধীর স্থান। এই প্রাকৃতিক অসীম জলাশয় বিশেষভাবে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। মাধবপুর লেকের সৌন্দর্যের জন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ, চারপাশের পাহাড় এবং সুন্দর প্রদর্শনী অবলম্বন করে এই স্থানটি পর্যটকদের মতামতে একটি অভাবনীয় স্থান।

মাধবপুর লেক
মাধবপুর লেক

মাধবপুর লেকের ঐতিহ্য

১৯৬৫ সালে মাধবপুর লেকের ঐতিহাসিক উত্থান ঘটে। চা বাগানের টিলায় বাঁধ দিয়ে পানি জমিয়ে এই লেক তৈরি করা হয়। প্রায় ৫০ একর আয়তনের মাধবপুর লেকের দৈর্ঘ্য ৩ কিলোমিটার এবং স্থান বিশেষে প্রস্থ ৫০ থেকে ৩০০ মিটার পর্যন্ত। এই লেকের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক গোধূলি আবহাওয়ার জন্যে এটি জানাজাতি প্রিয় একটি পর্যটন গন্ধ।

মাধবপুর লেকে ঘুরে

মাধবপুর লেকের চারপাশে ঘুরে বেড়ানো যায় ছোট ও বড় পাহাড় ও টিলা। এই প্রাকৃতিক পরিবেশের মাঝে মুক্ত গতি পেতে পারেন বা বিশ্রাম নিতে পারেন বিশেষ প্রকারের প্রস্তুত ট্রেকিং রুটে। লেকের পাশের টিলায় রয়েছে সুদৃশ্য চা বাগান। ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন মাধবপুর চা বাগানের ১১ নম্বর সেকশনে অবস্থিত মাধবপুর লেকের শোভা বাড়ায় সাদা ও নীল পদ্ম ফুল। শীতকালে এই লেকে অনেক অতিথি পাখিরও আগমন ঘটে।

মাধবপুর লেক
মাধবপুর লেক

মাধবপুর লেকের আকর্ষণ

মাধবপুর লেকে ঘিরে রয়েছে ছোট বড় পাহাড় ও টিলা। আর টিলায় রয়েছে সুদৃশ্য চা বাগান। ন্যাশনাল টি কোম্পানির মালিকানাধীন মাধবপুর চা বাগানের ১১ নম্বর সেকশনে অবস্থিত মাধবপুর লেকের শোভা বাড়ায় সাদা ও নীল পদ্ম ফুল। শীতকালে এই লেকে অনেক অতিথি পাখিরও আগমন ঘটে। পর্যটকদের নিরাপত্তা এবং চা বাগানের ব্যবস্থাপনার কথা বিবেচনা করে মাধবপুর লেকে সকাল ৮টা হতে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ভ্রমণকারীদের অবস্থান করতে দেয়া হয়। মাধবপুর লেক ঘুরে হাতে সময় থাকলে চলে যেতে পারেন ৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ দেখতে।

মাধবপুর লেক অতীত এবং ভবিষ্যৎ

মাধবপুর লেকের ঐতিহাসিক মূল্য ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য এটি পর্যটকদের জন্য একটি অপূর্ব গন্তব্য। প্রতি বছর হাজারো ভ্রমণকারী এখানে আসে এবং মাধবপুর লেকের সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে আত্মনির্ভর করে এই অদ্ভুত অভিজাত পর্যটক স্থলে ভ্রমণ করে।

মাধবপুর লেক বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ

মাধবপুর লেক বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদের একটি অপূর্ব উদাহরণ। এটি সুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং বাণিজ্যিক মূল্য সহ প্রাকৃতিক সম্পদের অধিকতম বিকাশের উদাহরণ। বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পে এই লেকের ভূমিকা অপূর্ব।

মাধবপুর লেক
মাধবপুর লেক

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে মাধবপুর লেকের দূরত্ব প্রায় ২০৭ কিলোমিটার এবং মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার পূর্বে অবস্থিত। মাধবপুর লেক দেখতে যেতে হলে প্রথমে শ্রীমঙ্গল আসতে হবে। এরপর ব্যক্তিগত গাড়ি, বাস অথবা সিএনজি করে কমলগঞ্জের ভানুগাছ চৌমোহনা হয়ে মাধবপুর লেক যেতে পারবেন। এছাড়া শ্রীমঙ্গল চা বাগানের কাছ থেকে সিএনজি ভাড়া নিয়েও মাধবপুর লেকে যাওয়া যায়।

ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল

রাজধানী ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল হয়ে সিলেটের পথে হানিফ পরিবহন, সোহাগ পরিবহন, টি আর ট্র্যাভেলস, শ্যামলী পরিবহন ইত্যাদি বিভিন্ন পরিবহনের বাস চলাচল করে। আর ঢাকা থেকে রেলপথে সিলেট যেতে চাইলে পারাবত এক্সপ্রেস, কালিনী এক্সপ্রেস, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস কিংবা উপবন এক্সপ্রেস ট্রেনে শ্রীমঙ্গল আসতে পারবেন। তবে আকাশপথে ভ্রমণ করতে চাইলে ঢাকা থেকে সিলেটে এসে সড়ক পথে শ্রীমঙ্গলে যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

শ্রীমঙ্গলে থাকার জন্য ভাল মানের হোটেল ও রিসোর্টের মধ্যে রয়েছে গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট এন্ড গলফ (পাঁচ তারকা), রেইন ফরেস্ট রিসোর্ট, টি টাউন রেস্ট হাউজ, টি রিসোর্ট (01749-014306), নিসর্গ ইকো রিসোর্ট (01766-557780), হোটেল প্লাজা।

এই সব হোটেল এবং রিসোর্টে বিভিন্ন সময় অনেক রকম ডিসকাউন্ট থাকে। তাই সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে তাদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনে ভাড়ার ক্ষেত্রে একটু দরদাম করে নিন। এছাড়া আরও কম খরচে শ্রীমঙ্গল থাকতে চাইলে শহরে নানা মানের হোটেল আছে, একটু খুঁজে দেখলেই আপনার মন মত হোটেল পেয়ে যাবেন।

কোথায় খাবেন

মাধবপুর লেকের আশে পাশে খাবারের তেমন কোন ব্যবস্থা নেই তাই প্রয়োজনে নিজ দায়িত্বে কিছু হালকা খাবার সাথে নিতে পারেন। এছাড়া শ্রীমঙ্গল শহরে ফিরে খেতে হবে। শ্রীমঙ্গলে নানা ধরণের রেস্তোরা আছে। যাদের মধ্যে পানশী ও পাঁচ ভাই রেস্টুরেন্ট অনেক জনপ্রিয়। এই রেস্টুরেন্টগুলোতে ভর্তা ভাজিসহ নানা পদের খাবার খেতে পারবেন ১০০-৫০০ টাকায়।

ভ্রমণের সময় যেসব বিষয় মনে রাখবেন

যেখানে সেখানে ময়লা ফেলবেন না এতে জীব বৈচিত্রের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়তে পারে।
শীতকাল ছাড়া অন্য সময়ে ভ্রমণের ক্ষেত্রে জোঁক ও সাপের থেকে সতর্ক থাকুন।
কম খরচে ভ্রমণ করতে চাইলে রিজার্ভ গাড়ি না করে শ্রীমঙ্গল-ভানুগাছ রোডের লোকাল সিএনজি অথবা বাস দিয়ে যাতায়াত করতে পারেন।

Similar Posts

  • চা বাগান

    চা বাগান বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত ও অপূর্ব সৌন্দর্যের জায়গা মনে হয়ে থাকে। বাংলাদেশের চা বাগানগুলি মূলত সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত। মঙ্গলগঞ্জের শ্রীমঙ্গল জেলা, যা পরিচিত হয়েছে বাংলাদেশের চায়ের রাজধানী হিসেবে, তার চা বাগানের সৌন্দর্যের কারণে প্রতিবার অনেক পর্যটক আসেন। শ্রীমঙ্গলের চা বাগানের সৌন্দর্য অপূর্ব ও মনোহর। ৯২ টির মত চা বাগান আছে এই জেলায়।…

  • মাধবকুন্ড জলপ্রপাত

    বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অপূর্ব অংশ মাধবকুন্ড জলপ্রপাত। এই লেখার মাধ্যমে আমরা মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের সম্পর্কে বিস্তারিত জানব, এবং আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পর্যটনের সম্ভাব্য সুযোগ নিয়ে আলোচনা করব। মাধবকুন্ড জলপ্রপাত: বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার বড়লেখা উপজেলায় অবস্থিত মাধবকুন্ড জলপ্রপাত একটি অদৃশ্য অনুভূতির সৃষ্টিকারী। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে উচ্চ জলপ্রপাতের মধ্যে একটি। এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি আকর্ষিত…

  • বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ

    বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ধলই চা বাগানে অবস্থিত বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধ একটি ঐতিহাসিক স্থান। এই স্মৃতিসৌধে বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমানের অমর সাহসিকতা ও বিদায়ী শহাদাতের স্মৃতি সংরক্ষিত রয়েছে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান স্মৃতিসৌধের সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব, এর ঐতিহাসিক প্রাসঙ্গিকতা, ভিত্তি, এবং এর ভবিষ্যৎতের প্রস্তাবিত পরিকল্পনা। বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান: একজন…

  • হাইল হাওর

    হাইল হাওর: বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অসাধারণ ঝর্ণা সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলা সদর, শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলা জুড়ে বিস্তৃত একটি বৃহদাকার জলাভূমির নাম হাইল হাওর (Hail Haor)। ১৪ টি বিল ঘেরা হাইল হাওরের সর্বমোট আয়তন প্রায় ১০ হাজার হেক্টর। প্রচুর লতা ও গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ থাকার কারণে স্থানীয়দের কাছে এটি লতাপাতার হাওর নামেও পরিচিত। হাওরের…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *