মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, বাংলাদেশের এক অদ্ভুত স্থানে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক স্থান। এই জমিদার বাড়িটি এক শতকের বেশি সময় ধরে টিকে থাকতে পারে এবং এটি বর্তমানে বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসাবে খুঁজে পাওয়া যায়। এই ব্লগ পোস্টে আমরা মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির ঐতিহাসিক পৃষ্ঠভূমি, জমিদার পরিবারের জীবনযাত্রা, এবং বাড়ির বর্তমান অবস্থান নিয়ে আলোচনা করব।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির উৎপত্তি

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির উত্থান ঘটে ১৮৮৯ সালে, যখন বাবু রামরতন ব্যানার্জী ৬২ বিঘা জমির উপর এই বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত করেন। এর মৌলিক ভবনের সামনে ও পেছনের অংশে পরবর্তী সময়ে সংস্কার করা হয়েছে, এবং বাবু রামরতন ব্যানার্জীর বংশধরেরা ভবনটি বাড়ি সম্প্রসারণ, পুকুর খনন, এবং দালানের উঁচুতলার কাজ করেছেন।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির বৈশিষ্ট্য

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে অবস্থিত কারুকার্যমন্ডিত ৯৫ টি কক্ষ, মন্দির, ভান্ডার, কাছারি ঘর, অতিথিশালা ও বৈঠকখানা, আস্তাবল, দৃষ্টিনন্দন নাচের ঘর এবং সামনে ও পিছনে দুইটি পুকুর রয়েছে। এই অদ্ভুত বৈশিষ্ট্যগুলি বাড়িটিকে একটি আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে উল্লেখযোগ্য করে তোলে।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির বৈশিষ্ট্য

১. ৯৫ টি কক্ষ: মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে বিশাল ৯৫ টি কক্ষ অবস্থিত আছে। এই কক্ষগুলি পুরনো সময়ের রূপ এবং আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন হয়েছে, যা আত্মীয় এবং বিদেশী ভ্রমণকারীদের জন্য আদর্শ অবস্থান তৈরি করে।

২. মন্দির: মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে একটি মন্দির অবস্থিত আছে যা ধার্মিক কার্যক্রম ও আধ্যাত্মিক আয়োজনে ব্যবহৃত হয়। মন্দিরটি অল্প শোকহীন এবং শান্তির এক জায়গা হিসেবে পরিচিত।

৩. ভান্ডার: বাড়িতে বিশাল ভান্ডার রয়েছে, যেটি জমি উৎপন্নতা এবং অন্যান্য কৃষি কাজে ব্যবহৃত হয়। এটি জমিদার পরিবারের আর্থিক সুরক্ষা ও সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

৪. কাছারি ঘর: মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে কাছারি ঘর অবস্থিত আছে যা স্থানীয় পণ্য এবং কারুকার্যের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি স্থানীয় কারুকার্যের উন্নত করতে একটি সুবিধাজনক স্থান প্রদান করে।

৫. অতিথিশালা ও বৈঠকখানা: যারা মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি পরিবর্তে আসছে, তাদের জন্য অতিথিশালা ও বৈঠকখানা অবস্থিত রয়েছে। এটি আত্মীয় এবং আগামীর জন্য একটি সুবিধাজনক স্থান প্রদান করে।

৬. আস্তাবল: মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে একটি আস্তাবল থাকলে, যা জমিদার পরিবারের পশুসংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়। এটি স্থানীয় পশু চাষের জন্য একটি উপকারী সুবিধা সাধারিত করে।

৭. দৃষ্টিনন্দন নাচের ঘর: মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে একটি দৃষ্টিনন্দন নাচের ঘর রয়েছে, যেটি স্থানীয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি স্থানীয় লোকসভা এবং প্রকৃতির সাথে একত্র আসায় সাংস্কৃতিক অধিবেশন এবং আত্মীয়বান্ধবী নৃত্যের মাধ্যমে আত্মীয় অনুষ্ঠান পরিচালনা করা হয়।

৮. সামনে ও পিছনে দুইটি পুকুর: বাড়ির সামনে ও পিছনে দুইটি পুকুর রয়েছে, যা সৌন্দর্যের দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত মুখ্য। এই পুকুরগুলি জমির উৎপন্নতা এবং পর্যাপ্ত পানি সরবরাহে কাজ করে।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি একটি এককালের দাপুটে জমিদারদের বসবাসের বাড়ি, যা তার বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য প্রস্তুত। এই স্থানের অপূর্ব সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক মানের কারণে, মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের একটি প্রত্নতাত্ত্বিক অধিবাসন হিসেবে চিরকাল মনে থাকতে হবে।

১৯৪৭ সালের ভারত বিভাজন এবং বাড়ির অবস্থা

১৯৪৭ সালে ভারত বিভাজনের পর, জমিদার পরিবারের সদস্যরা কলকাতা চলে যান এবং বাড়িটি কিছুদিনের জন্য পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার এখানে কিশোরী সংশোধন কেন্দ্র ও হাসপাতাল চালু করে। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালের দিকে ভবনটি স্কুল-কলেজের কাজ পরিচালনা করবার জন্য ব্যবহার করা হতো।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি এবং প্রত্নতাত্ত্বিক মহৎকর্ম

১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার তালিকাভুক্ত করে। বর্তমানে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে একটি সরকারি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা সরকারি মুড়াপাড়া কলেজ নামে পরিচিত। এই কলেজটি অত্যন্ত উচ্চ মানের শিক্ষা সরবরাহ করে এবং একটি প্রত্নতাত্ত্বিক এবং ঐতিহাসিক স্থান হিসেবে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির মর্গদর্শন করে।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির সংস্কার

বাবু রামরতন ব্যানার্জীর বংশধরেরা এই জমিদার বাড়িটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর বেশ কয়েকবার বাড়িটি সংস্কার করেছেন। বিভিন্ন সময়ে ভবনের সামনে ও পেছনের অংশে সংস্কার কাজ করা হয়েছে, এছাড়া পুকুর খনন ও দালানের উঁচুতলার কাজ করা হয়েছে। বর্তমানে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে কারুকার্যমন্ডিত ৯৫ টি কক্ষ, মন্দির, ভান্ডার, কাছারি ঘর, অতিথিশালা ও বৈঠকখানা, আস্তাবল, দৃষ্টিনন্দন নাচের ঘর এবং সামনে ও পিছনে দুইটি পুকুর রয়েছে।

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ির পরিবারের জীবনযাত্রা

১৯৪৭ সালে ভারত উপমহাদেশ বিভক্ত হওয়ার পর জমিদার পরিবারের সদস্যরা কলকাতা চলে যান। এই সময়ে জমিদার বাড়িটি কিছুদিনের জন্য পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকে। ১৯৪৮ সালে পাকিস্তান সরকার এখানে কিশোরী সংশোধন কেন্দ্র ও হাসপাতাল চালু করে। পরবর্তীতে ১৯৬৬ সালের দিকে ভবনটি স্কুল-কলেজের কাজ পরিচালনা করবার জন্য ব্যবহার করা হতো। ১৯৮৬ সালে বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনার তালিকাভুক্ত করে। বর্তমানে মুড়াপাড়া জমিদার বাড়িতে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, যা সরকারি মুড়াপাড়া কলেজ নামে পরিচিত।

সমাপ্তি

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি, বাংলাদেশের এক অদ্ভুত এবং ঐতিহাসিক স্থান, একটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে উভয় প্রাচীন এবং আধুনিক ঐতিহাসিক অধ্যায়ে সমৃদ্ধ। এই ব্লগ পোস্টে আমরা এই অদ্ভুত স্থানের ঐতিহাসিক গল্প জানতে পেরেছি, তার সংস্কারের উন্নতি, এবং বর্তমানে এটির অবস্থান। মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি সম্পর্কে আমাদের জানা অধিক তথ্যের সাথে, এই স্থানে ডে আউটিং বা দিনে ঘুরতে গিয়ে অদৃশ্য এই সৌন্দর্যের অধিকারী জমিদার বাড়িতে ঘুরে আসার জন্য প্রস্তুত হোন।

কিভাবে যাবেন

ঢাকার সায়েদাবাদ, গুলিস্তান বা যাত্রাবাড়ি বাস টার্মিনাল থেকে বাসে করে (মেঘলা, আসিয়ান বা গ্লোরি) করে ভুলতা বা রূপসী বাসস্ট্যান্ডে যেতে হবে। নরসিংদী ও ভৈরবগামী বাসে ভুলতা এসে সেখান থেকে রিকশা বা সিএনজিতে (জনপ্রতি ২০ টাকা ভাড়া) দিয়ে সরাসরি মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি যাওয়া যায়।

আবার অন্য পথে, কুড়িল ফ্লাইওভারের নিচ থেকে জনপ্রতি ৬০ টাকা ভাড়ায় কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত এসে। কাঞ্চন ব্রিজের কাছে জনপ্রতি ৪০ টাকা সিএনজি ভাড়ায় রূপগঞ্জ শীতলক্ষ্যা ফেরিঘাটে পৌছে ফেরী পার হয়ে রিকশা বা অটো নিয়ে জমিদার বাড়িতে যেতে পারবেন।

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

মুড়াপাড়া জমিদার বাড়ি এর কাছে সোনারগাঁও তে রয়েছে লোকশিল্প জাদুঘর, পানাম সিটি, বাংলার তাজমহল এবং মায়াদ্বীপ। একদিনে ভ্রমণ হিসেবে এই জায়গা গুলো ঘুরে দেখতে পারেন।

Similar Posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *