মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট

বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপূর্ণ স্থান মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় প্রায় ৩০ বিঘা জমির উপর প্রতিষ্ঠিত “মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট” বাংলাদেশের প্রথম একক প্রকৃতি ও প্রবাসী অনুভূতির স্থান। এই প্রতিষ্ঠানে আপনি প্রকৃতির আশ্রয় নিতে এবং সৌন্দর্যের মধ্যে আপনার বাসতি নেওয়ার জন্য এসেছেন। এই পোস্টে আমরা মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টের ভিন্নতা, সৌন্দর্য, এবং আকর্ষণগুলি নিয়ে আলোচনা করব।

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে অবস্থান

গজারিয়া, মুন্সীগঞ্জ জেলায় অবস্থিত মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট আসতে বিশেষভাবে সুস্বাগতপূর্ণ একটি জায়গা। এখানে পৌরাণিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং শান্ত পরিবেশের সাথে মিলে যায়। রিসোর্টে প্রবেশ করার জন্য আপনি প্রথমেই একটি ফটক দেখতে পাবেন, যেখানে কিছু অদ্ভুত প্রাণীর ভাস্কর্য দেখতে পাবেন। এরপর প্রবেশ পথ পার করে ভেতরে ঢুকলেই আপনাকে হয়তো স্বাধীনভাবে শোকর হয়ে দেখতে পারে, কারণ এখানে প্রতি মুহূর্তেই বড় বড় বড় শোকরবাচ্চা আপনার সাথে মিলে যাচ্ছে।

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে ভ্রমণ: প্রবেশ ফটক থেকে শুরু

আমাদের ভ্রমণ শুরু হবে প্রবেশ ফটক দিয়ে, যেখানে বেশ কয়েকটি প্রাণীর ভাস্কর্য আপনাকে স্বাগত জানাবে। এতে দেখতে পাচ্ছেন বানর, চিত্রা হরিণ, কালিম পাখি, খরগোশ, লজ্জাবতী হনুমান, কোয়েল পাখি, কুমির এবং অন্যান্য বিভিন্ন প্রাণী। একবার প্রবেশ ফটক পেরিয়ে ভেতরে ঢুকতে পারলে, শান্ত এবং সুন্দর পরিবেশের মুগ্ধতা আপনাকে স্বাধীনভাবে চোখে পরে।

কুটিরগুলো: নেপালি ঢঙে সৃষ্ট প্রকৃতির সাথে অনুষ্ঠিত

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে আপনি পাচ্ছেন ১০টি এসি এবং নন-এসি কটেজ, যা নেপালি ঢঙে তৈরী করা হয়েছে। এই কুটিরগুলি ব্যক্তিগত এবং পরিবারের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের সুবিধা সম্পন্ন। এছাড়া, এই কুটিরগুলি প্রাকৃতিক পরিবেশে অবস্থিত, যা মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টকে আরও আত্মীয় এবং আত্মিক তৈরি করে।

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট

সুবিধাসম্পন্ন ভিলেজ: অল ইন ওয়ান প্লেস

রিসোর্টের ভিলেজে থাকা বাংলা ও চাইনিজ খাবারের সেবা, বার বি কিউ, পিকনিক আয়োজন, মাছ ধরার সুবিধা সহ বিভিন্ন আকর্ষণের জন্য আপনি এখানে প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন। আমরা বিশেষভাবে এই ভিলেজ অফার করা সুবিধাগুলি বিবরণ করছি:

  1. চিকিত্সা সেবা: যে কোনও অপৎকালে দ্রুত চিকিত্সা সেবা উপলব্ধ রয়েছে।
  2. লন্ড্রি: ভ্রমণের সময় আপনি আপনার পোশাক সতীকারে রেখে নিতে পারবেন।
  3. সুভ্যেনির শপ: স্থানীয় এবং বিদেশী উৎপাদনের সুভ্যেনির শপ থেকে কিছু অনন্য আইটেম কিনতে পারেন।
  4. নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা: স্থানীয় আকর্ষণে হেরে নাও, রিসোর্ট থেকে বাহুল্যিক পরিবহণের সুবিধা পাবেন।
  5. খেলাধুলা: দুইটি বিশাল খেলার মাঠে খেলাধুলা করতে পারবেন।

বিনোদন ও রিক্রেশন: অল ইন ওয়ান প্লেস

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে বিভিন্ন বিনোদন রাইড এবং রিক্রেশনের সুযোগ রয়েছে। যেসব মজার এবং উত্সাহী রাইড পাবেন, তা হলো:

  1. পেন্ডুলাম পাইরেট শিপ: একটি অদ্ভুত ভ্রমণ রাইড, যা আপনাকে সমুদ্রের সাথে এক হতে অনুমতি দেয়।
  2. মেরিগো রাউন্ড: একটি রোমান্টিক ও চমকপূর্ণ রাইড, যা দিয়ে আপনি রিসোর্টের সুন্দর পরিবেশ দেখতে পারবেন।
  3. প্যাডেল বোট: একটি নৌকায় বোঝাই এবং নৌকা চালানোর উপযোগী সুযোগ।
  4. ব্যাটারী কার: ছোটদের জন্য একটি আকর্ষণমূলক সুযোগ।
  5. নাগরদোলা: স্থানীয় পরিবারের সাথে একটি সুবিধাময় রাইড।
  6. সাইকেল চালনা: প্রাকৃতিক আবহাওয়ায় সাইকেল চালানোর উপযোগী সুযোগ।
  7. মিকি মাউস বাইক: ছোটদের জন্য মজার এবং হোকার বাইক চালাতে এই সুযোগ।

এই রাইডগুলি অস্ত্রিত প্রতি ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা হারে উপভোগ করা যায়। আর রিসোর্টের ৩ডি সিনেপ্লেক্সে ঢুকতে খরচ হয় জনপ্রতি ৩০ টাকা।

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট
মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্ট

রিসোর্টের রুম ভাড়া

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরণের প্যাকেজ চালু থাকে। তাই বর্তমান প্যাকেজ সম্পর্কে জানতে রিসোর্টের ওয়েবসাইট চেক করুন অথবা অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বারেও কল করতে পারে। চলুন জেনে নেই রিসোর্টের বর্তমান রুম ভাড়ার বিস্তারিত।

সুপিরিয়র কাপল রুম – ২ টি (কামিনী ও রজনীগন্ধা):
ডে-লং: ৭০০০ টাকা
ডে-নাইট: ৮০০০ টাকা
নাইট: ৬৫০০ টাকা
এক্সট্রা বেড জনপ্রতি ৫০০

প্রিমিয়ার কাপল সূট – ৪ টি (এসি)
ডে-লং: ৬,৫০০ টাকা
১রাত/১দিন: ৭,৫০০ টাকা
নাইট: ৪,৫০০ টাকা

সুপিরিয়র হানিমুন সুট (কুঞ্জলতা)
ডে-লং: ৮,০০০ টাকা
১রাত/১দিন: ৯,৫০০ টাকা
নাইট: ৬,০০০ টাকা

ডিলাক্স কাপল স্যুট – নন-এসি ২ টি (হাসনাহেনা ও গন্ধরাজ)
ডে-লং ভাড়া: ৪৫০০ টাকা
১রাত/১দিন ভাড়া: ৫০০০ টাকা
নাইট-লং ভাড়া: ৪০০০ টাকা

প্রিমিয়ার ফ্যামিলি রুম
ডে-লং ভাড়া: ৬৫০০ টাকা
১রাত/১দিন ভাড়া: ৭৫০০ টাকা
নাইট-লং ভাড়া: ৪৫০০

ডে-লং রুম ভাড়া নিলে চেক-ইনের সময় সকাল ৯ টা এবং চেক আউটের সময় বিকাল ৫ টা।
১রাত/১দিন ভাড়া নিলে চেক-ইনের সময় সকাল ৯ টা এবং চেক আউটের সময় পরদিন সকাল ৮ টা।
নাইট-লং রুম ভাড়া চেক-ইনের সময় সন্ধ্যা ৬ টা এবং চেক আউটের সময় পরদিন সকাল ৮ টা।

(সকল ভাড়া পরিবর্তনশীল, কতৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যেকোন সময় কম বেশি হতে পারে।)

টিকেট মূল্য

মেঘনা ভিলেজ হলিডে রিসোর্টে প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্যে প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা এবং শিশু-কিশোরদের প্রবেশ মূল্য ২০ টাকা। সুইমিং পুলে ২ ঘন্টা সাতার কাটার জন্য এন্ট্রি ফি জনপ্রতি ২৫০ টাকা। মেহলিস ডাইনিং রেস্তোরায় বাংলাদেশী কুজিনে লাঞ্চ প্যাকেজের মূল্য জনপ্রতি ৩৫০ টাকা।
এছাড়া রিসোর্ট এন্ট্রি, পুল এন্ট্রি, আনলিমিটেড সুইমিং এবং বাংলাদেশী কুজিন লাঞ্চের প্যাকেজ মুল্য জনপ্রতি ৫৯৯ টাকা।

প্রবেশ সময় : সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত।

যোগাযোগ
ঢাকা অফিস:
সুইট – ৫১২এ, লেভেল ৫
ইব্রাহিম ম্যানশন, ১১ পুরানা পল্টন, ঢাকা।
ফোন: 02-9570782, 01552-308849, 01552-333563
বুকিং – 01712-203336
অনুসন্ধান – 01718-471961, 01817-104126
ওয়েবসাইট: meghnavillage.com
ফেইসবুক: fb.com/meghvillresort

কিভাবে যাবেন

ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর ব্রিজ, সোনারগাঁ হয়ে মেঘনা ব্রিজের ওপারে বালুকান্দি বাসস্ট্যান্ড থেকে বা-দিকের রাস্তা ধরে ১ কিলোমিটার এগিয়ে গেলেই মেঘনা ভিলেজ রিসোর্ট-এর প্রবেশ দ্বার দেখতে পাবেন। চাইলে রিসোর্টের গাড়িতে করেও যেতে পারবেন। তবে সেজন্য ১,৫০০+ টাকা খরচ করতে হবে।

Similar Posts

  • ষোলআনী সৈকত

    মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া থানার গহিরা মেঘনা নদীর পাড়ে, প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ষোলআনী সৈকত বাংলাদেশের একটি অদ্ভুত পর্যটন স্থল। পূর্বে দৌলতপুর নামে পরিচিত ছিল, এই স্থানটি এখন ষোলআনী সৈকত নামে পরিচিত। এখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, মেঘনা নদীর শান্ত প্রবাহ, এবং প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী পর্যায়ক্রম একসাথে মিশে গড়েছে এক অদম্য পর্যটন স্থল। ষোলআনী সৈকত: এক আকাশচুম্বী স্বর্গ ষোলআনী…

  • জগদীশ চন্দ্র বসু স্মৃতি জাদুঘর

    জগদীশ চন্দ্র বসু স্মৃতি জাদুঘর ঢাকা থেকে মাত্র ৩২ কিলোমিটার দূরে, মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত একটি অদ্ভুত স্থান। এই জাদুঘরে বাংলাদেশের প্রথম সফল বিজ্ঞানী জগদীশ চন্দ্র বসুর জীবন, কাজ, এবং ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলির স্মৃতি সংরক্ষিত রয়েছে। এই পোস্টে আমরা জগদীশ চন্দ্র বসু স্মৃতি জাদুঘরের অদ্ভুত আকর্ষণ, ঐতিহাসিক তথ্য, এবং বসুর জীবনকে আলোকপাত করবো। জগদীশ চন্দ্র…

  • ইদ্রাকপুর কেল্লা

    ইদ্রাকপুর কেল্লা (Idrakpur Fort) মুন্সীগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থিত একটি ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন, যা ১৬৬০ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালিন বাংলার সুবাদার ও সেনাপতি মীর জুমলা ইছামতি নদীর তীরে নির্মাণ করেন। ইদ্রাকপুর কেল্লা, ৮২ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৭২ মিটার প্রস্থে, একটি মজবুত ইটের দূর্গ, মগ জলদস্যু এবং পর্তুগিজদের হাত থেকে রক্ষার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। ইদ্রাকপুর কেল্লা ঢাকার লালবাগ কেল্লা…

  • বাবা আদম মসজিদ

    মুন্সিগঞ্জ জেলার মীরকাদিমে অবস্থিত বাবা আদম মসজিদ, ছয় গম্বুজের অদ্ভুত স্থান। এই মসজিদটি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং ধার্মিক উপনিবেশের একটি অমূল্য অস্ত্র। বাবা আদমের শহীদে হোক বলে এই মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে, যা একটি ঐতিহাসিক কাহিনি নিয়ে রূপান্তর করেছে। এই পোস্টে, আমরা এই মসজিদের ঐতিহাসিক মাহাত্ম্য, স্থানীয় অসীম সৌন্দর্য, এবং ভ্রমণের জন্য অনুসরণযোগ্য ট্রিপ গাইড নিয়ে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *