নর্থব্রুক হল

নর্থব্রুক হল

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক দক্ষিণ এবং উদার সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির একটি অদ্ভুত অংশ হল “নর্থব্রুক হল,” যা ১৮৭৪ সালে ভারতের গভর্নর জেনারেল জর্জ ব্যরিং নর্থব্রুক এর ঢাকা সফরকে স্মরণীয় করে রাখতে মোতাবেক নির্মাণ করা হয়েছিল। এই বিশেষ ভবনটির বৈশিষ্ট্য ও ইতিহাসকে জানতে আসুন নর্থব্রুক হলের অদ্ভুত কারণের দিকে একটি ভ্রমণ করা হোক।

নর্থব্রুক হলের ভবন নির্মাণ

নর্থব্রুক হল, এক বিঘা জমির ওপর অবস্থিত একটি প্রাচীন ভবন, যা দুইটি করে অষ্টভুজাকৃতির কারুকার্যখচিত ৪টি মিনার দিয়ে চিহ্নিত হয়েছে। মূল ভবনের উত্তর দিকে অবস্থিত সকল প্রবেশ দরজাগুলো অশ্বখুরাকৃতি ও অর্ধ-বৃত্তাকার। মুসলিম ঐতিহ্যের স্মারক নর্থব্রুক হলের দক্ষিণ ও উত্তর দিকের নকশায় স্বতন্ত্রতা ও বৈচিত্রতা লক্ষ করা যায়। ফলে প্রথমবার দুই দিক থেকে দেখলে এই ভবনকে দুইটি পৃথক ভবন বলে মনে হয়।

বর্তমানে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরের নর্থব্রুক হল প্রাঙ্গণে ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব, ডায়াবেটিক সমিতি এবং সিটি করপোরেশনের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় রয়েছে। ভবনের পাশের রাস্তাটি এখনো নর্থব্রুক হল রোড নামে সুপরিচিত। সংরক্ষিত প্রাচীন সৌন্দর্যমণ্ডিত পুরাকীর্তি নর্থব্রুক হলের অতীতের গাম্ভীর্য্য না থাকলেও এর চূড়া ও দেয়ালের কারুকাজ আগত দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে।

নর্থব্রুক হলের ঐতিহাসিক মূল্য

নর্থব্রুক হল বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যের একটি অমূল্য অবদান। এটি ১৮৭৪ সালে নির্মাণ হয়েছিল এবং তার সম্প্রতিরত্ন রক্ষা করা হচ্ছে। এই ভবনটি একটি অলৌকিক ইউরোপীয় স্থাপত্যরীতির উদাহরণ, যা মোগল স্থাপত্যরীতির সাথে মিশে গিয়ে একটি অদ্বিতীয় সংমিশ্রণ তৈরি করেছে। এটি স্থানীয় লোকজনের মাঝে একটি খোলা গল্প, একটি ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ প্রদান করে।

নর্থব্রুক হল ও স্থানীয় সম্প্রদায়

নর্থব্রুক হল একটি মৌলিক অস্ত্রাগার, যা স্থানীয় সম্প্রদায় ও ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির জন্য একটি সংজ্ঞানার্থক স্থান। এটি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং সাংস্কৃতিক মৌল্যের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি অপূর্ণতা স্থাপন করেছে, এটি বাংলাদেশের প্রাচীন ঐতিহাসিক উপকূলে একটি অমূল্য সাক্ষর হিসেবে দাখিল হয়েছে।

স্থাপত্যরীতি ও স্থানীয় পরিচয়

নর্থব্রুক হলের ভবনের দুই পাশে দুইটি করে অষ্টভুজাকৃতির কারুকার্যখচিত ৪টি মিনার রয়েছে। ভবনটির উত্তর দিকে অবস্থিত প্রবেশ দরজাগুলো অশ্বখুরাকৃতি ও অর্ধ-বৃত্তাকার, এবং তার রং লাল হওয়ার কারণে নর্থব্রুক হলটি স্থানীয়ভাবে “নর্থব্রুক হল লালকুঠি” নামে পরিচিত। এটি মূসলিম ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে দক্ষিণ ও উত্তর দিকে স্বতন্ত্রতা ও বৈচিত্রতা লক্ষ করতে পারা যায়।

ইতিহাসের চূড়া

নর্থব্রুক হলের চূড়া অত্যন্ত ঐতিহাসিক এবং মর্মস্পর্শী। এই ভবনের নির্মাণের শুরু হয় ১৮৭৪ সালে, জেনারেল জর্জ ব্যরিং নর্থব্রুক এর ভারত সফর থেকে মোতাবেক। এই সময়ে ভারত ব্যাপক ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক প্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছিল, এবং নর্থব্রুক হলও একটি ইউরোপীয় স্টাইলে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এটি হোলটি একটি অদ্ভুত প্রকারে ভারতীয় এবং ইউরোপীয় সাংস্কৃতিক সংমিশ্রণ দেখা দেয়।

নর্থব্রুক হলের চূড়াতে অবস্থিত স্থাপত্যরীতির সংযোজন হলে এই ভবনের একটি অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য তৈরি হয়েছে। এটি একটি বৃহত্তর অষ্টভুজাকৃতি যা একবিংশ শতাব্দীতে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ ছাদ এবং মিনারের সাথে কাজ করে। এই চূড়াটি দেখতে অত্যন্ত মহাকাশবিশিষ্ট এবং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ধারার সাথে মিলে যায়।

এটি একটি জাদুকরের বুটিক মহলের মতো প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, যা ইউরোপীয় আদর্শ ও মোগল প্রভাবে সজ্জিত। ভবনের দুই পাশে অষ্টমখী মিনারের সাথে এটি একটি অলংকৃত অদ্ভুত ছাদ সহ একটি অসাধারণ দৃশ্য প্রদান করে। এই বৃহত্তর অষ্টভুজাকৃতির চূড়া থেকে দেখলে, নর্থব্রুক হলটি দুটি পৃথক ভবন মনে হয়, যা স্থানীয় লোকজনের মধ্যে এই ভবনকে দুটি পৃথক ইতিহাসের চূড়া হিসেবে পরিচিত করে।

চূড়াটির কাছে গুলি থাকলেও, এটি একটি প্রাচীন ইউরোপীয় বৃহত্তর ভবনের মতো অত্যন্ত শান্ত এবং প্রাচীন বটানিক গার্ডেনের মতো জঙ্গল এবং বাগানের সাথে মিলে যায়। এই চূড়া অবশ্যই একবার দেখতে আসতে হবে, এবং এটি ভ্রমণকারীদের একটি অদ্ভুত অভিজ্ঞতা প্রদান করতে সাহায্য করতে পারে।

বর্তমানে নর্থব্রুক হল

স্থান

বুড়িগঙ্গা নদীর তীরের ফরাশগঞ্জ এলাকায় এখন নর্থব্রুক হল প্রাঙ্গণের অংশ হিসেবে অবস্থিত। ভবনের পাশে রয়েছে ফরাশগঞ্জ স্পোর্টিং ক্লাব, ডায়াবেটিক সমিতি এবং সিটি করপোরেশনের ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়। এটি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে খুবই পরিচিত এবং এর পাশের রাস্তা এখনো “নর্থব্রুক হল রোড” নামে পরিচিত।

সৌন্দর্য ও সংরক্ষণ

নর্থব্রুক হল একটি অদ্ভুত এবং সুন্দর স্থান, যা বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। এই স্থানটি প্রাচীন সৌন্দর্যমণ্ডিত পুরাকীর্তির সঙ্গে পুরাতাত্ত্বিক সম্পদ সংরক্ষিত করা হয়েছে। চূড়া ও দেয়ালের কারুকাজ দর্শনার্থীদের মুগ্ধ করে এবং স্থানীয় লোকজনের মাঝে এটি একটি গর্বের সূত্র হয়ে থাকে।

সমাপ্তি মন্তব্য

নর্থব্রুক হল একটি অমূল্য ঐতিহাসিক স্মৃতি, যা বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ে একটি মৌল্যবান অংশ। জেনারেল জর্জ ব্যরিং এর ঢাকা সফর এক শতকের বেশি আগে এই ভবন তৈরি হয়েছিল, এবং তার ঐতিহাসিক মৌল্য এখনো অবশ্যই বজায় রাখা হয়েছে। বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত নর্থব্রুক হল বর্তমানে স্থানীয় লোকজনের গর্বের সূত্র, একটি সাংস্কৃতিক হ্রদয়, এবং ভারতীয় ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির এক চেতনা।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা শহরের যেকোন স্থান হতে গুলিস্তান বা সদরঘাট এসে সরাসরি রিক্সা ভাড়া নিয়ে নর্থব্রুক হল বা লালকুঠি আসতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

রাজধানী ঢাকার প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই কম বেশি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এখানে ৫ তারকা মানের হোটেল থেকে শুরু করে সাধারণ মানের হোটেলও পাবেন। ৫ তারকা হোটের মধ্যে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ, হোটেল লা মেরিডিয়েন, র‍্যাডিসন ব্লু ওয়াটার গার্ডেন ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এছাড়া বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, ফকিরাপুল, পল্টন, গুলিস্তান এবং পুরান ঢাকাতে কম খরচে থাকার অসংখ্য আবাসিক হোটেল রয়েছে।

কোথায় খাবেন

পুরান ঢাকার বিখ্যাত কাজি আলাউদ্দিন রোডের হাজির বিরিয়ানি, হোটেল রয়েলের পেস্তা বাদামের শরবত, বেচারাম দেউড়ি রোডে নান্নার মোরগ পোলাও, লালবাগ শাহী মসজিদের সাথে মোহন মিয়ার জুস এবং হানিফের তেহরি সহ বিভিন্ন মুখরোচক খাবারের স্বাদ চেখে দেখতে পারেন।

Similar Posts

  • গেরদা ফলক

    পরিচিতি ও ঐতিহাসিক নোট: গেরদা ফলক গেরদা ফলক, ফরিদপুর সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গেরদা গ্রামের একটি অদম্য ঐতিহাসিক দৃশ্য। গেরদা মসজিদের পশ্চিম দেয়ালে আরবি ভাষায় লেখা পাথরের এক বিশেষ ফলক অবস্থান করে, যা ধারণা করা হয়, ১০১৩ হিজরি বা ১৬০৪ খ্রিষ্টাব্দে লেখা মূলত এই ফলককে কেন্দ্র করে গেরদা মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে। গেরদা…

  • বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক

    বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক (Bangabandhu Safari Park) গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নে অবস্থিত। এটি ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়ক ধরে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত বাঘের বাজার থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিম দিকে অবস্থিত যা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এক অদ্ভুত স্থান। এই সাফারি পার্কটি অবস্থিত সমৃদ্ধ আবাসিক এলাকায় প্রবেশের পার্থক্য করে দিয়েছে, এবং এটি একটি আদর্শ ঘুরে বেড়াবার জায়গা হিসেবে…

  • আরশিনগর হলিডে রিসোর্ট

    ঢাকা থেকে এক সজীব জীবনের অবসরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে সময় কাটানোর জন্য একটি আদর্শ স্থান খোঁজছেন? তাহলে, গাজীপুর জেলার ভাওয়ালে অবস্থিত “আরশিনগর হলিডে রিসোর্ট এন্ড পিকনিক স্পট (Arshinagar Holiday Resort)” আপনার মুক্তির দ্বার হতে পারে। এই রিসোর্ট, যা ঢাকা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, সবুজ উদ্যান, খেলার মাঠ, সুইমিং পুল, রেস্টুরেন্ট, রিসোর্ট, পিকনিক, বোটিং, ফিশিং,…

  • বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট

    বঙ্গবন্ধু বহুমুখী সেতুর পূর্ব পাশে, তৈরি হয়েছে একটি অপূর্ব রিসোর্ট – বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের মাঝে অবস্তিত এই রিসোর্টটি, তার অনগ্রেজি নামে পরিচিত ছিল ‘যমুনা রিসোর্ট’ (Jamuna Resort) হিসেবে। এখন এটি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় বাঙালি বিশেষ হোটেল হিসেবে পরিচিত আছে, যেখানে আপনি একটি অসাধারণ অভিজ্ঞান অথবা এক দিনের ছুটি উপভোগ করতে পারেন। বঙ্গবন্ধু সেতু রিসোর্ট…

  • বাংলার তাজমহল

    বাংলাদেশ বিশ্বের অনন্য ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের দেশ। এই সুন্দর দেশে অবস্থিত নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পেরাব গ্রামে রয়েছে বাংলার এক অদ্ভুত জায়গা- বাংলার তাজমহল। বাংলাদেশের আগ্রা তাজমহলগুলির মধ্যে একটি এই স্থানে নির্মিত, যা প্রাচীন সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে একটি অবিস্মরণীয় স্থান হিসাবে পরিচিত। তাজমহলের নির্মাণ ২০০৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছিল তাজমহলের নির্মাণ কাজ, এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী…

  • শেখ রাসেল শিশু পার্ক

    শেখ রাসেল শিশু পার্ক গোপালগঞ্জ জেলায় টুঙ্গিপাড়ায় অবস্থিত একটি পরিবারিক বিনোদন কেন্দ্র। মধুমতী নদীর তীরে চমৎকার প্রাকৃতিক পরিবেশে নিয়ে গড়ে উঠা এই পার্কটি সব বয়সী মানুষকে সমানভাবে আকৃষ্ট করে। প্রতিদিনই অসংখ্য দর্শনার্থীর পদচারনায় শেখ রাসেল শিশু পার্ক মুখর হয়ে উঠে। শেখ রাসেল শিশু পার্কের বিস্তারিত: প্রায় ৫ একর জায়গা জুড়ে স্থাপিত শেখ রাসেল শিশু পার্কে…

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *